খেলার সময় মোদির মাইনফিল্ডে দুদিন টিকল ইংল্যান্ড!
২৫-০২-২০২১, ২১:০২
খেলার সময় ডেস্ক

রেকর্ডময় দিবারাত্রির টেস্টে অবিস্মরণীয় এক জয় পেল টিম ইন্ডিয়া। ইংলিশরা পৌনে দুদিনেই হারাল দশ উইকেট। ইশান্ত শর্মার শততম টেস্ট চির স্মরণীয় করে রাখলেন আকশার প্যাটেল এবং অশ্বিন জুটি।
প্রথম ইনিংসে ১১২ রানে অল আউট হয় ইংল্যান্ড। জবাবে, রুটের বোলিং নৈপূণ্যে ১৪৫ রানেই শেষ হয়ে যায় ভারতের প্রথম ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে ৮১ রান তুলতেই থামতে হয় থ্রি লায়নদের। জবাবে, কোন উইকেট না হারিয়ে ৪৯ রান করে বিরাট কোহলির দল।
২০০২ সাল, শারজাহ ক্রিকেট গ্রাউন্ড। পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়ছিল পরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়া। সেবারই শেষ দুদিনে টেস্টের চার ইনিংস দেখেছিল ক্রিকেট বিশ্ব। ১৯ বছর পর আবারো একই নাটকের পুনর্মঞ্চায়ন। তবে, বদলে গেল কুশীলব। ভারতের মাটিতে ধরাশায়ী হল ব্রিটিশ রাজত্ব।
পুরো দুই দিনও ম্যাচটা দেখতে পারল না সমর্থকরা। তবে, সেসব নিয়ে ভাবার সময় কই? ম্যাচ শেষের এ হাসিটা যে অনেক আনন্দের। তার চেয়েও বেশি স্বস্তির, সিরিজে যে এগিয়ে গেছে ভারত। অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের মঞ্চটা।
রুট বাহিনীর সুযোগ ছিল ম্যাচটা হাতে নেবার, কিন্তু ফসকে গেল। আসলে গেল বলা উচিত হবে না, কারণ কেড়ে নিল দুজন স্পিনার। মোতেরা'তে মাইনফিল্ড বানিয়ে ইংলিশদের ব্যাটিং লাইনআপকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করলেন আকশার এবং অশ্বিন জুটি। দুজনে মিলে নিয়েছেন ১৮ উইকেট।
জয়টা ভাগাভাগি করলেও, রেকর্ড করেছেন দুজনে আলাদা আলাদা। মাত্র দ্বিতীয় টেস্টেই দু ইনিংসে ৫ উইকেট দখলে গেছে প্যাটেলের। আর অশ্বিন তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ৪০০তম উইকেটটি, তাও মাত্র ৭৭ টেস্টে। শততম টেস্টে এক উইকেট পেলেও, এমন জয়ে নিশ্চই এখন আনন্দে আত্মহারা ইশান্ত শর্মা।
এতো গেল রেকর্ডের কথা। চলুন দেখে আসি কেমন ছিল ম্যাচের চালচিত্র।
দ্বিতীয় দিনে শুরুটা করেছিলেন স্বাভাবিক গতিতেই দুই অপরাজিত ভারতীয় ব্যাটসম্যান। মাথা নিচু করে, ব্যাট ঠুকে সামাল দিচ্ছিলেন ইংলিশ বোলারদের। কিন্তু পারেননি বেশিক্ষণ। জ্যাক লিচের বলে রাহানে ফিরে গেলে শুরু হয় উইকেট পতনের মহামারি। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের পিচ তখন ঘূর্ণি জাদুর আঁখড়া।
জো রুটের ৬ ওভারে শেষ টিম ইন্ডিয়া। তিন মেডেনে মাত্র ৮ রান দিয়েই ৫ উইকেট তুলে নেন ইংলিশ অধিনায়ক। তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ১৪৫ রানে শেষ হয়ে যায় ভারত। প্রথম সেশনে ৪৬ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। বিপরীতে লিড পায় মাত্র ৩৩ রানের।
ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলে বোল্ড জ্যাক ক্রলি। আর তিন নম্বর বলে বেয়ারস্টো। বোঝা গেলো ৩৩ এর লিডটাই পাহাড়সম হতে যাচ্ছে অতিথিদের সামনে। হলোও তাই। ৫০ রান তুলতেই নেই ৪ টপ অর্ডার। পরের ব্যাটসম্যানরা কোথায় দায়িত্ব নেবেন, তা না উইকেট বিলানোর উৎসবে নামেন তারা। ৮১ রানেই শেষ ইংল্যান্ডের প্রতিরোধ।
৪৯ রানের টার্গেট নিয়ে খুব বেশি ভাবনা চিন্তায় যাননি রোহিত শর্মা এবং শুভমান গিল। লিচ-রুটকে চড়াও হওয়ার সুযোগ না দিয়ে পালটা আক্রমণ করেন এ দুজন। ফলাফল, ১০ উইকেটের জয়।