বাণিজ্য সময় যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে চীনে যাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা
২৫-০১-২০২১, ১১:০৭
কামরুল হাসান সবুজ

সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ টানার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলেছে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ অর্থনীতির দেশ চীন।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) ব্যবসা ও উন্নয়নবিষয়ক জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা আঙ্কটাড প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বলা হচ্ছে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে সরাসরি বিনিয়োগের পরিমাণ পরিমাণ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। আর এতেই দেশটি তার শীর্ষ স্থান হারিয়েছে।
জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত বছর চীনে সরাসরি বিনিয়োগ বেড়েছে ৪ শতাংশ। আর এসব তথ্যই আভাস দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশ হতে চলেছে চীন। চীনে গত বছর সরাসরি বিদেশি এসেছে ১৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আর যুক্তরাষ্ট্রে পেয়েছে ১৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
অথচ ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এই বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২৫১ বিলিয়ন ডলর আর চীনের দখলে ছিল ১৪০ বিলিয়ন ডলার। যদিও নতুন করে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে চীন এগিয়ে তবুও মোট সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের হিসেবে এখনও চূড়ায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব তথ্য এই প্রমাণই দেয় যে, দশক ধরে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বেশ ভালো আস্থার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠছে চীন।
বিশ্লেষকরাও বলছেন, এবার যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ অবস্থানের পতন অনেকটাই সহজ হয়ে পড়ছে। চীন-মার্কিন চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যেই তারা পূর্বাভাস দিয়েছে ২০২৮ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে ছাড়িয়ে যাবে চীনের অর্থনীতি।
২০১৬ সালে সর্বোচ্চ বিদেশি বিনিয়োগ টেনেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ওই বছর দেশটিতে এই বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৪৭২ বিলিয়ন ডলার আর চীনের ছিল মাত্র ১৩৭ বিলিয়ন ডলার। তবে এর পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সাল থেকেই চীনে এই বিনিয়োগ বাড়তে থাকে এবং যুক্তরাষ্ট্রে তা কমতে থাকে।
অবশ্য ট্রাম্প প্রশাসন মার্কিন কোম্পানিগুলোকে চীন থেকে সরে আসতে উৎসাহ দিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রে তাদের প্রতিষ্ঠিত করতে আশ্বাসও দিয়েছে।
এদিকে গত বছর করোনার ধাক্কায় যখন বিপর্যস্ত মার্কিন অর্থনীতি তখন দ্রুতই তা সামলে নিয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে চীন। ২০২০ সালে চীনের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। প্রথম সারির অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে চীনই একমাত্র দেশ যে দেশটি করোনার তাণ্ডবের মধ্যেও সংকোচনের মধ্যে পড়েনি।
তবে এটা ঠিক ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে প্রায় অর্ধেক (৪২ শতাংশ)।