পশ্চিমবঙ্গ দু’বার কন্যা জন্ম দেওয়ায় গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা
১২-০১-২০২১, ১১:৪২
আন্তর্জাতিক সময় ডেস্ক

দু’বার কন্যা সন্তান হওয়ায় গৃহবধূকে গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গে। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের ময়ূরেশ্বর থানা এলাকার বেজা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতেও ওই গৃহবধূ এ কথা জানিয়েছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যম নিউজ১৮ জানায়, বীরভূমের মহম্মদ বাজার থানার বাসিন্দা সমাপ্তি সাধুর সঙ্গে ১১ বছর আগে ময়ূরেশ্বর থানার অন্তর্গত বেজা গ্রামের শিব শংকর প্রামাণিক নামে একজন স্কুল শিক্ষকের বিয়ে হয়। পরপর দু’বার কন্যা সন্তান হওয়ার কারণে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে।
নিহত ওই গৃহবধূর প্রথম কন্যা সন্তানের বয়স ৯ বছর এবং দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের বয়স তিন বছর। গৃহবধূ মৃত্যুকালীন ভিডিও জবানবন্দিতে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের কথা জানিয়েছেন। দ্বিতীয় কন্যা সন্তান হওয়ার পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন ব্যাপক অত্যাচার শুরু করে বলে দাবি করেন ওই গৃহবধূ। পুত্র সন্তান না হওয়ায় নিয়মিত মারধর করা হতো তাকে।
গত ২৬ ডিসেম্বর ওই গৃহবধূর শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। অসুস্থ অবস্থায় প্রথমে সিউড়ি পরে বর্ধমানের একটি নার্সিং হোমে নিয়ে যাওয়ার হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রায় ১ সপ্তাহ পর তার মৃত্যু হয়।
পরে ৬ জানুয়ারি ময়ূরেশ্বর থানায় গৃহবধূর দাদা পল্লব কুমার সাধু লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদ এবং ননদের স্বামীর বিরুদ্ধে। মৃত গৃহবধূর দাদা পল্লব কুমার সাধু বলেন, বোনের পরপর দুটি মেয়ে হওয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করত। ইতোমধ্যেই একদিন বোনের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন আমার বোন তার মৃত্যুকালীন ভিডিও জবানবন্দিতে তার ওপর অত্যাচার হওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
ওই গৃহবধূ মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।