মহানগর সময় মধ্যরাতে শহর ছেড়ে মাওয়া ঘাটে কী?
৩০-১১-২০২০, ১১:২৩
শাতিলা শারমিন
চলে গেল অগ্রহায়ণের শেষ পূর্ণিমাও। শীত জেঁকে বসতে শুরু করেছে প্রকৃতিতে। কিন্তু প্রকৃতির পালাবদল উপলব্ধির সুযোগ কোথায় নগরের মানুষের। হাজারো ব্যস্ততা থেকে বেরিয়ে তাই মাঝরাতে রাজধানীবাসী ভিড় করছেন মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ঘাটে। পদ্মা সেতুর কারণে এক্সপ্রেস হাইওয়ে যার একটি বড় কারণ।
কুয়াশার চাদরে মায়াবী আলোর ছটা। এখনো সময় হয়নি, কনকনে ঠাণ্ডায় জবুথবু হওয়ার। প্রকৃতির টানে তাই ব্যস্ত নগর ছেড়ে অনেকেই বেরিয়ে পড়েছেন। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের বাধাহীন পথ অল্প সময়ে পৌঁছে দিচ্ছে তাদের মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ঘাটে।
একজন বলেন, এখন গাড়ি নিয়ে ৪০ মিনিটে মাওয়া আসা যায়। যদিও ঢাকার কোথায় থেকে রওনা দিয়ে এত সহজেই যাতায়াত করা যায় না।
ইলিশের দরাদরিতে হালকা শীতেও জমজমাট মাওয়া ঘাট। এদিকে নদীর পাড়েই চলছে মাছকাটা। নানা নিদের্শনাও যে রয়েছে ভোজনরসিকদের। এ বিষয়ে একজন বলেন, ইলিশ মাছ ভাজা, গরম ভাত, নানা পদের ভর্তা পাওয়া যায় এখানে। এ জন্য রাতেবেলায় আমরা খেতে আসি।
হলুদ-লবণে মাখা ইলিশ তেলের স্পর্শ পেলেই গন্ধ ছড়াচ্ছে বহুদূরে। ইলিশপ্রেমীদের ভিড় করা ছাড়া উপায়ই বা কি! একজন বলেন, খাবার খুবই সুস্বাদু। আর মধ্যরাতে গরম ভাতের সঙ্গে ভাজা ইলিশ খেতে অনেক মজা।
শুধুই কি খাওয়াদাওয়া! রাতের আড্ডায় ভেসে বেড়াচ্ছে গানের সুরও। আড্ডা দেওয়াদের মধ্যে একজন বলেন, শুধু খাওয়া দাওয়া নয়, রাতে নদী নৌকায় করে আড্ডা দেওয়াটা অনেক মজার ব্যাপার। বিশেষ করে নদীর নিস্তব্ধ পরিবেশ আরও বেশি আকর্ষণীয় করে আমাদের।
মাওয়া ঘাট রাতেও জীবন্ত থাকে তার নদী পারাপারের জন্য। নদীর টান এড়ানো যে অসম্ভব বাঙালির জন্য।
ঢাকা শহর ছেড়ে হোক না তা রাতে, মানুষ একটু বিনোদনের খোঁজেই আসে এই মাওয়া ঘাটে। এখানে এসে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ইলিশ। আসলে ছুটে আসার একটিই কারণ, একটু খোলা বাতাস এবং একটু শান্তিতে কোনো একটা জায়গা থেকে ঘুরে আসা।