বাংলার সময় হাসপাতালে মৃত্যুশয্যা স্বামী, অর্থসংকটে নারী হ্যান্ডবল প্রশিক্ষক
২৮-১১-২০২০, ০৯:২৬
বাংলার সময় ডেস্ক

দেশের জন্য খেলাধুলা করলেও অর্থাভাবে মৃত্যুশয্যা স্বামীর চিকিৎসা করাতে পারছেন না নারী হ্যান্ডবল প্রশিক্ষক কবিতা রানী মালো। ২৩ বছর ধরে দেশের জন্য খেলাধুলা করেন মাদারীপুরের নারী হ্যান্ডবল কোচ ও বিজিএমসির নিয়মিত এই খেলোয়াড়। করোনাকালে চাকরি হারিয়ে মৃত্যুশয্যা স্বামীকে নিয়ে চোখের জলে গা ভাসাচ্ছেন তিনি। তার দুর্দিনে পাশে নেই কোনও সংগঠন। অভাব-অনটনের সংসারে স্বামীর চিকিৎসার ব্যয়বহন করা তার জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বামীর উন্নত চিকিৎসার জন্য সহায়তা, আর নিজের একটি কর্মসংস্থানের দাবি জানিয়েছেন নারী এই হ্যান্ডবল কোচ।
জানা যায়, ১৯৯৭ সালে মাঠে খেলাধুলা শুরু করেন মাদারীপুর শহরের কাঠপট্টি এলাকার কবিতা রানী মালো। পরে ২০০২ সালে বিজিএমসিতে খেলার সুযোগ পান নারী হ্যান্ডবল খেলোয়াড় হিসেবে। সেখান (বিজিএমসি) থেকে চলতি বছরেও খেলাধুলা করে প্রতি মাসে সাড়ে ১৬ হাজার টাকা সম্মানী পেতেন কবিতা। কিন্তু করোনা দুর্যোগে গত তিন মাস ধরে বন্ধ গেছে খেলাধুলা। একই সঙ্গে বন্ধ তার সম্মানী ভাতাও। এতে একদিকে সংসার চালানো যেমন দায়, অন্যদিকে টিবি ও কিডনি রোগে আক্রান্ত মৃত্যুশয্যা স্বামীর চিকিৎসার ব্যয়বহন করা তার জন্য কষ্টসাধ্য।
বিভিন্ন সময়ে জেলা ও দেশের জন্য খেলে পেয়েছেন নানা সম্মাননা। প্রাপ্তির শোকেসে আছে নানা অর্জন। যে মানুষটি পরিবার-পরিজন রেখে খেলাধুলা করে এত কিছু করেছেন তার এই দুর্দিনে পাশে নেই কোনও সংগঠন। বর্তমানে স্বামীকে নিয়ে মাদারীপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করালেও অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না কবিতা। সবার কাছে আর্তি জানিয়েছেন সাহায্যের।
মাদারীপুর হ্যান্ডবল ট্রেনিং সেন্টারের সহকারী প্রশিক্ষক (কোচ) কবিতা রানী মালো জানান, দেশের জন্য খেলাধুলা করে ২০০২ সালে বিজিএমসি থেকে হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতায় প্রথম হন তিনি। এ ছাড়া বেক্সিমকোতে পরপর ৪ বার চ্যাম্পিয়নশিপ লাভ করেন কবিতা। তার স্বামীর উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা। পরিবারে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মেয়ে রয়েছে। একদিকে সংসার খরচ ও অন্যদিকে স্বামীর চিকিৎসার ব্যয়বহন করা দুটোই এখন কষ্টসাধ্য। এ ক্ষেত্রে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার ও হ্যান্ডবল ট্রেনিং সেন্টারের সভাপতি মোহাম্মদ মাহবুব হাসান জানান, নারী এই হ্যান্ডবল প্রশিক্ষকের মনোবল ধরে রাখতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। এক্ষেত্রে হ্যান্ডবল ট্রেনিং সেন্টার ও জেলা পুলিশ ইউনিট থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা দেওয়া হবে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ড. রহিমা খাতুন বলেন, কবিতা রানী মালোর স্বামীর চিকিৎসার জন্য প্রাথমিক ক্ষুদ্র পরিসরে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তিনি চাইলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সহায়তা করা হবে।