বাংলার সময় করোনা নেগেটিভ সনদ না থাকায় বেনাপোলে আটকা বাংলাদেশি যাত্রীরা
২৭-১১-২০২০, ১৪:৪০
বেনাপোল প্রতিনিধি

করোনা নেগেটিভ সনদ না থাকায় বেনাপোল ইমিগ্রেশনে আটকা পড়েছে ভারত ফেরত তিন শতাধিক বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে ঘরে ফিরতে না পেরে পরিবার পরিজন নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। এসব যাত্রীদের অধিকাংশই ভারতে গিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। শুক্রবার সকাল থেকে ভারত ফেরত বাংলাদেশিদের করোনা নেগেটিভ সনদ লাগবে নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এসব ভারত ফেরত যাত্রীদের ইমিগ্রেশনে স্বাস্থ্য বিভাগে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
এর আগে করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে বিজনেস ও মেডিকেল ভিসায় দেশি, বিদেশি যাত্রীদের ভারত ভ্রমণের সুযোগ হয়। আজ থেকে ভারত থেকে ফিরতেও লাগছে করোনা নেগেটিভ সনদ।
ভারত ফেরত আটকে পড়া বাংলাদেশি যাত্রী আব্দুল কুদ্দুস জানান, সকাল ৭টায় থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত তিনি পরিবার নিয়ে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে আটকা পড়ে আছেন। করোনা নেগেটিভ সনদ না থাকায় তাকে দেশে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না।
যাত্রী নোমান জানান, তিনি করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে ভারতে গিয়েছিলেন। ফিরতে আবার করোনা নেগেটিভ সনদ লাগবে জানতেন না। ভারতের ইমিগ্রেশন ছেড়ে দিলেও বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগ আটকে দিয়েছে।
যাত্রী সানোয়ারা খাতুন জানান, তিনি অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে ভারতে গিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। আগে থেকে করোনা নেগেটিভ সনদের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ জানালে এ দুর্ভোগে পড়তে হতো না।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি) মহাসিন জানান, দেশে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে এর আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার সময় দেশি-বিদেশি সকলের করোনা নেগেটিভ সনদ লাগছিল। এখন দ্বিতীয় ধাপে করোনা সংক্রমণ রোধে ভারত থেকে ফেরার সময়ও ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষা করানো নেগেটিভ সনদ লাগবে। আজকে যেহেতু এ নিয়ম কার্যকর হয়েছে তাই অনেকে জানতে না পেরে সনদ সংগ্রহ করতে পারে নাই। বিষয়টি উপর মহলে কথা বলে বিবেচনা করার চেষ্টা চলছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার বিচিত্র মল্লিক জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় আজ থেকে ভারত ফেরত দেশি-বিদেশি সব যাত্রীদের বাংলাদেশে আসতে হলে করোনা নেগেটিভ সনদ প্রয়োজন হচ্ছে। যারা এ খবর জানতেন না তারা আটকা পড়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। বিষয়টি তারা দেখছেন।
জানা যায়, বেনাপোল থেকে ভারতের প্রধান বাণিজ্যিক শহর কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে এ পথে চিকিৎসা, ব্যবসা ও ভ্রমণে পাসপোর্টধারী যাত্রীরা বেশি যাতায়াত করে থাকেন। প্রতিবছর এ পথে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ দেশি-বিদেশি যাত্রী যাতায়াত করে । এদের কাছ থেকে ভ্রমণকর বাবদ সরকারের রাজস্ব আসে প্রায় ১০০ কোটির কাছাকাছি।
চীনে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী দেশ ভারতে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিরোধ হিসাবে দুই দেশের সরকার নানান ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এর মধ্যে গত ১৩ মার্চ ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় যাতায়াত বন্ধ হয় বাংলাদেশিদের। বাংলাদেশেও আটকে পড়েন ভারতীয়রা। এতে বিশেষ করে গুরুতর রোগীরা চিকিৎসার জন্য যেতে না পেরে বেকায়দায় পড়েন। যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরাও বড় ধরনের লোকসানে ছিলেন। পরবর্তীতে ৫ মাস পর প্রথমে বাংলাদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরার সুযোগ হয়। পরে বাংলাদেশিদের মেডিকেল আর বিজনেস ভিসায় যাতায়াতে সুযোগ দেয় ভারত সরকার।