বিনোদনের সময় সর্বাধিক দেখার রেকর্ড ‘দ্য কুইনস গ্যাম্বিট’
২৬-১১-২০২০, ২৩:৩৯
বিনোদন সময় ডেস্ক

নেট দুনিয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অ্যাপস ও ওয়েবপেজভিত্তিক বিনোদন প্ল্যাটফর্মগুলো। এই প্ল্যাটফর্মগুলোকে কেন্দ্র করে তৈরি হচ্ছে নাটক, সিনেমা, মিউজিক ভিডিওসহ বিনোদনের নানান জিনিস।
পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচিত্রের পাশাপাশি বিনোদন জগতে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রগুলোও জনপ্রিয়তার একটা জায়গা দখল করে রেখেছে প্রথম থেকেই।
আর ছোট পর্দার বিনোদনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে সবসময় রয়েছে টেলিভিশন ড্রামা বা নাটকগুলো। আর তা যদি হয় টিভি ধারাবাহিক বা টিভি সিরিজ তাহলে তো কথাই নেই। তবে সিনে জগতে পর্দার পরিবর্তন হয়ে তা এখন ওয়েবে এসে ঠেকেছে। আর এখানেও জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে নির্মিত নাটকগুলো যা নেট দুনিয়ার কাছে ওয়েবসিরিজ নামেই পরিচিত।
সারা বিশ্বে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে মধ্যে নেটফ্লিক্স দাপিয়ে বেড়ানো শীর্ষ একটি প্ল্যাটফর্ম। আর সেই নেটফ্লিক্সেরই নয়, অন্যান্য সকল প্ল্যাটফর্মের প্রচারিত ওয়েবসিরিজগুলোকে টেক্কা দিয়ে সর্বাধিক দেখার (ভিউ) রেকর্ডটি করে নিয়েছে ‘দ্য কুইন’স গ্যাম্বিট’ মিনি ওয়েবসিরিজটি। সাত পর্বের এই সিরিজটি এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বে ৬ কোটি ২০ লাখ বার দেখা হওয়া এক মাত্র ড্রামা।
‘দ্য কুইন’স গ্যাম্বিট’ বা সহজ বাংলায় রানির প্যাঁচ মূলত দাবা খেলার এক বিশেষ চাল। আর দাবা খেলার এই চাল নিয়ে নির্মিত মিনি সিরিজটি গত ২৪ অক্টোবর মুক্তি পায় নেটফ্লিক্সের পর্দায়। বিশ্বের ৬৩টি দেশে এই সিরিজ রয়েছে নেটফ্লিক্সে সবচেয়ে বেশি দেখা কনটেন্টের ভেতর এক নম্বর অবস্থানে। কুইন’স গ্যাম্বিটের সফলতা নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা।
গার্ডিয়ান বলছে, ওয়েব সিরিজটি মার্কিন লেখক ওয়াল্টার টেভিসের একই নামের ১৯৮৩ সালের উপন্যাস থেকে নেওয়া। এই উপন্যাসের মূল চরিত্র বেথ হারমন। গাড়ি দুর্ঘটনায় মায়ের মৃত্যুর পর ৯ বছরের বেথ বেড়ে ওঠে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে। সেখানকার নিরাপত্তারক্ষীর কাছ থেকে দাবা খেলা শেখে বেথ। একসময় সেই হয়ে ওঠে বিশ্বের সেরা দাবাড়ু।
তবে এই দুইয়ের মাঝে রয়েছে মাদকাসক্তিসহ নানা প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে বেথের যুদ্ধ আর উত্থান-পতনের গল্প। সেই গল্পে শক্ত করে বেথের হাত ধরে রেখেছিল পালিত মা।
বেথ হারমনের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া আর্জেন্টাইন-ব্রিটিশ অভিনেত্রী অ্যানা টেইলর জয়। মিয়ামিতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ মা ও ‘পাওয়ারবোট রেসার’ বাবার ঘরে জন্ম নেন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট অ্যানা। তিনি যখন খুব ছোট, তখন তার পরিবার বুয়েনস এইরেসে চলে যায়। ৬ বছর বয়সে থিতু হয় লন্ডনে।
‘চিত্রনাট্য পড়ে মনে হলো, আমি বেথ চরিত্রের একাকিত্ব অনুভব করি। তার সংগ্রাম, তার সফলতা—এসব কিছু ছাপিয়ে বেথের নীরবতা, নিঃসঙ্গতা আমাকে স্পর্শ করছিল। আর যখন দুটো মানুষ একই রকম অনুভব করে, তখন কেউ আর একা থাকে না। সেই নিঃসঙ্গতায় বেথের আশ্রয় ছিল দাবা। আর আমার আশ্রয় অভিনয়।’
১৬ বছর বয়সে মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও মাত্র এক দশকের মাথায়, এই মুহূর্তে তিনি বিশ্বের অন্যতম আলোচিত অভিনেত্রী। ২৬ বছর বয়সী অ্যানা সিরিজে তার চরিত্রটি সম্পর্কে বলেন, ‘চিত্রনাট্য পড়ে মনে হলো, আমি বেথ চরিত্রের একাকিত্ব অনুভব করি। তার সংগ্রাম, তার সফলতা—এসব কিছু ছাপিয়ে বেথের নীরবতা, নিঃসঙ্গতা আমাকে স্পর্শ করছিল। আর যখন দুটো মানুষ একই রকম অনুভব করে, তখন কেউ আর একা থাকে না। সেই নিঃসঙ্গতায় বেথের আশ্রয় ছিল দাবা। আর আমার আশ্রয় অভিনয়।’
সিরিজটি বানিয়েছেন স্কট ফ্র্যাঙ্ক আর অ্যালান স্কট। এর আগে ‘আউট অব সাইট’ ও ‘লোগান’ ছবির জন্য চিত্রনাট্যকার হিসেবে দুটি অস্কার জিতেছেন স্কট ফ্র্যাঙ্ক। এই চিত্রনাট্যও তারই লেখা। সিরিজের প্রেক্ষাপট ১৯৫০ থেকে ১৯৬০-এর দশক। তখন নারীদের দাবা খেলার চল ছিল না বললেই চলে। ইতোমধ্যে এই সিরিজের একটি দৃশ্য ছোট ও বড় পর্দার স্পোর্টস ড্রামা বিভাগে ‘সেরা খেলার দৃশ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।