বাংলার সময় বৃদ্ধের সঙ্গে শিশুর বিয়ের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ
২৪-১১-২০২০, ২২:৩০
জাহাঙ্গীর আলম

জামালপুরে সাত সন্তানের জনক ৮৫ বছরের বৃদ্ধের সাথে ১১ বছরের মাদ্রাসা পড়ুয়া ৫ম শ্রেণী ছাত্রীর বিয়ের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি শাহেদ নুর উদ্দীনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেওয়া হয়। একই সাথে আগামী ২৬ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে জামালপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও দেওয়ানগঞ্জ থানার ওসিকে আদেশ দিয়েছেন।
জামালপুরে জেলা প্রশাসক মো. এনামুল হক দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম আব্দুল্লাহ্ বিন রশিদকে প্রধান করে তিন সদস্যে বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটির কাজ শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
সম্প্রতি জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চরআমখাওয়া ইউনিয়নের বয়রাপাড়া গ্রামের ৮৫ বছরের বৃদ্ধের সাথে ১১ বছর বয়সের ৫ম শ্রেণীর মাদ্রাসা ছাত্রী বিয়ে নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তবে বৃদ্ধ নিজের ইচ্ছায় এই বিয়ে করেনি। বরং এলাকার মাতবররা তার ওপর এই বিয়ে চাপিয়ে দিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, এলাকার মহিলা মাদ্রাসার ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর (১১) সঙ্গে ৮৫ বছরের বৃদ্ধ মহির উদ্দিনের ছেলে সুরমান আলীর বখাটে ছেলে শাহিনের দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে ১১ বছরের মাদ্রাসা ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ায়, ঘটনা জানাজানি হওয়ার ভয়ে ছাত্রীর গর্ভের সন্তানটি নষ্ট করে ফেলেন শাহিন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে ছাত্রীর পরিবার এলাকার ইউপি মেম্বার নাদু, গফুর মাষ্টার এবং কুদ্দুস মাষ্টারসহ এলাকার মাতব্বরদের কাছে ঘটনার বিচার দাবি করে।
এই নিয়ে এক সালিশ বৈঠক বসে। সালিশ বৈঠকে বৃদ্ধ মহিরের নাতি শাহিনের সকল অপরাধ চাপানো হয় ৮৫ বছরের বৃদ্ধ দাদার উপর। সালিশ বৈঠকে বৃদ্ধের সঙ্গে ১১ বছরে ছাত্রীকে বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। শালিস বৈঠকে বৃদ্ধ ও নাতি শাহিনকে ১০ টি দোররা মারা হয়। পরে নাতির দোষ বৃদ্ধের উপর চাপিয়ে ১১ বছরে ছাত্রীকে ৮৫ বছরের বৃদ্ধ মহিরের সাথে বিয়ে দেয়া হয়।
সরেজমিনে ৮৫ বছরের বৃদ্ধ মহির উদ্দিনের সাথে দেখা করলেও সে বয়সের কারণে ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না, চোখেও ঠিক মতো দেখেন না। সাত সন্তানের বাবা মহিরের দুই স্ত্রী মারা গেছে অনেক আগে। তৃতীয় বিয়েটি করেছেন ২৭ বছর আগে।