অন্যান্য সময় হারিয়ে যাচ্ছে হেমন্তের চিরচেনা দৃশ্যপট
০৮-১১-২০২০, ১০:১০
হেদায়েতুল ইসলাম বাবু
ক্রমেই হারিয়ে যেতে বসেছে গান-কবিতায় ষড়ঋতু বন্দনার দৃশ্যপট। তবে, এখনও শিশির-ভেজা স্নিগ্ধ সকাল ও ফুল-ফসলের প্রাচুর্যে ঠিকই ধরা দেয় হেমন্ত। নিজস্ব রূপ-বৈচিত্র্যে শীতের আগাম বার্তা নিয়ে উত্তরের প্রকৃতিতে বেজে ওঠে হেমন্তের সুর। ঋতুর চক্রবাকে শুধু সৌন্দর্য উপভোগ নয়, সুন্দর জীবন গড়তে প্রকৃতির কাছে শিক্ষা নেয়ার পরামর্শ সংস্কৃতিজনদের।
কুয়াশার চাদরে মোড়া গ্রামীণ ভোর। ধান গাছ, কচুপাতা আর দূর্বাঘাসের ডগায় রাতভর জমাট-বাঁধা স্বচ্ছ শিশির কণার রাজত্বে কুসুম রাঙা সূর্যের উস্কানিতে যেন আরো বর্ণিল হয়ে ওঠে হেমন্তের স্নিগ্ধ সকাল।
কুয়াশার আবরণ ভেদ করে আকাশে রক্তিম সূর্যের সাথে শৈশবের লুটোপুটি। ততক্ষণে সবুজ ঘাসের সাথে কমলা হলুদ রঙের শেফালির মিতালী হয়ে ওঠে দর্শনীয়।
ভরদুপুরে সোনালী ধানের গোছায় কৃষকের কাঁচি মঙ্গা ঘোচালেও বদলে গেছে হেমন্তের সব আচার অনুষ্ঠান।
কৃষকরা বলেন, আগে কার্তিক মাসে অনেক উৎসব হতো। ঘরে ঘরে নবান্ন চলতো। অভাবের কারণে এখন আর সেসব হয় না।
আর এরইমধ্যে বিলঝিলে লাল শাপলার উঁকিঝুঁকি, রাস্তার ধারে ছাতিমের মাতাল গন্ধ, রূপ ছড়াতে এতোটুকু কার্পণ্য নেই জংলী ফুলের। তারপরও স্বস্তির নিঃশ্বাস যেন আটকে যায় নানা সঙ্কটে।
এ প্রসঙ্গে কবি দিলরুবা শাহাদাৎ বলেন, পাখিরা উড়ছে। মাঠে মাঠে সোনালী ধান। সব কিছুই আগের মতই আছে। শুধু মনের দিক থেকে আমরা একটা সংকটে আছি।
অন্যদিক সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে দৃশ্যমান কাঞ্চনজঙ্ঘা যেন হেমন্তের উপহার হয়েই ধরা দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনে সঙ্কটাপন্ন ঋতুবৈচিত্র ধরে রাখতে প্রকৃতির প্রতি সদয় না হলে হারিয়ে যাবে অপার সম্ভাবনা। এমন মত সংস্কৃতিজনদের।
নদীপাড়ে ঝিরঝিরে হাওয়ায় হেমন্তের পড়ন্ত বিকেলে নিমিষেই মনের কোণ থেকে হারিয়ে যায় উদাস উদাস ভাব। সম্ভাবনাময় একটি ভোরের জন্য অপেক্ষা বাড়ায় হেমন্তের সূর্যাস্ত।