বাংলার সময় ‘ঈশ্বরের খোয়াবনামা’ আর স্ত্রীর ইচ্ছে পূরণে জমি বেচে কিনলেন হাতি
২২-০৯-২০২০, ১৮:০৩
মোফাখখারুল ইসলাম মজনু

লালমনিরহাটের সাধারণ কৃষক দুলাল চন্দ্র তার স্ত্রীর প্রতি ‘পরম ঈশ্বরের গায়েবি নির্দেশনা’ আর ভালোবাসায় জমি-জমা বিক্রি করে কিনেছেন হাতি। সেই হাতি একনজর দেখতে উৎসুক জনতার যেন কমতি নেই।
লাললমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের একটি অজোপাড়াগাঁয়ের নাম রতিধর। ওই গ্রামের মেঠোপথ ধরে চলছে এখন হাতি। এ যেন গরীবের বাড়িতে হাতির পা। হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো তা দেখতে যেন উৎসুক জনতার কমতি নেই। সাধারণ কৃষক দুলালের দাবি তার স্ত্রী তুলশী রানীর ওপর দেবযোগ আছে। প্রায়শই দেব ভর করে তার স্ত্রী তুলশী রানীর ওপর। এমন প্রেক্ষাপটে ১৫ দিন আগে ‘পরমেশ্বর তাকে গায়েবিভাবে হাতি কেনার নির্দেশনা দেন, তাও আবার শুনতে পান দুলাল চন্দ্র’।
এমন নির্দেশনা নতুন নয়। এর আগেও খরগোশ, রাজহাঁস, রামছাগল ও ঘোড়ার পর এবার এসেছে হাতি কেনার নির্দেশনা। পরমেশ্বরের সন্তুষ্টি লাভ আর তুলশী রানীর বাসনা পূরণে এক বিঘা জমি বিক্রি করে প্রায় ১৭ লাখ টাকা দিয়ে হাতি কেনেন দুলাল চন্দ্র।
অন্য কিছু তো নয়, হাতি! তার নেই কোনো বাজার। অনেক খোঁজের পর হাতি মেলে মৌলভীবাজারে। মৌলভীবাজারের রাজকান্দী গ্রাম থেকে হাতি কেনেন তিনি। হাতি লালমনিরহাট সদর উপজেলার রতিদর দুলালের গ্রামের বাড়ি পৌঁছাতে সময় লাগে পাঁচ দিন। জানা যায় এই পাঁচদিন নিরন্ন উপবাস করেছেন তুলশী রানী।
অন্য কিছু তো নয়, হাতি! তার নেই কোনো বাজার। অনেক খোঁজের পর হাতি মেলে মৌলভীবাজারে। মৌলভীবাজারের রাজকান্দী গ্রাম থেকে হাতি কেনেন তিনি। হাতি লালমনিরহাট সদর উপজেলার রতিদর দুলালের গ্রামের বাড়ি পৌঁছাতে সময় লাগে পাঁচ দিন। জানা যায় এই পাঁচদিন নিরন্ন উপবাস করেছেন তুলশী রানী।
শুধু হাতী কেনাই নয়, সঙ্গে থাকা খাওয়াসহ মাসিক ১৫ হাজার টাকা বেতনে মৌলভীবাজার থেকে হাতীর দেখভালের জন্য নিয়ে এসেছেন ওই এলাকার ইব্রাহিম নামের মাহুথ।
গ্রামীণ জনপদে হাতি, তাও আবার ‘পরমেশ্বরের নির্দেশনা পূরণে’; এ খবর যেন ছড়িয়ে পড়ছে নিমিষে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এক নজর এই হাতি দেখতে বাড়ছে উৎসুক জনতার ভিড়। হাতির ছুটে চলা গাছ গাছালি টেনে খাওয়াসহ হাতির খেলা দেখতে আসা মানুষের আনন্দের যেন কমতি নেই।
ঘটনাস্থলেই কথা হয় পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রামের রাজার উপজেলার হীরেন্দ্র রায়ের সঙ্গে। তিনি জানালেন, তার অনুভূতির কথা। শুনলেন দুলাল তুলশীর আগের কথা।
ঘটনাস্থলেই কথা হয় পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রামের রাজার উপজেলার হীরেন্দ্র রায়ের সঙ্গে। তিনি জানালেন, তার অনুভূতির কথা। শুনলেন দুলাল তুলশীর আগের কথা।
তিনি জানান, শুধুই হাতি নয়। এর আগে ‘পরমেশ্বর’ তুলশী রানীকে গায়েবিভাবে ও স্বপ্নে খরগোশ, রাজহাঁস, রামছাগল, ঘোড়া কিনতে বলেছিলেন। তারা সেটি করেছেন, তবে এবার হাতি কেনার বিষয়টির অনুভূতিটা একটু ভিন্ন স্বাদের।
স্থানীয় রামায়ণ নামের একজন জানান, এ ঘটনাটি তারা বিশ্বাস করেন ও দুলাল তুলশীর পরমেশ্বর ভক্তিতে এলাকার মানুষের মাঝে অনেকটাই ধর্মীয় অনুভূতির ভীত আরেও শক্ত করেছে।
লালমনিরহাট সদরের পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, তিনি ঘটনাটি শুনে ঘটনাস্থল রতিধর দেউলাপাড়ায় গিয়ে ঘটনার সত্যতা পান।
তিনি জানান, ধর্মীয় বিষয়টি একান্তই তাদের। তবে হাতি কেনা ও স্ত্রীর ভালোবাসায় দুলালের জুড়ি নেই।